আসেনি ভালোবাসার দলের কেউ , প্রতিপক্ষ তৃণমূলের কর্মীরা সৎকার করলো মৃত বিজেপি কর্মীর দেহ

9th May 2021 12:16 pm বর্ধমান
আসেনি ভালোবাসার দলের কেউ , প্রতিপক্ষ তৃণমূলের কর্মীরা সৎকার করলো মৃত বিজেপি কর্মীর দেহ


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) :  করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ভেবে কেউ এগিয়ে যাননি বর্ষীয়ান বিজেপি কর্মীর মৃতদেহ সৎকারে । তাই প্রৌঢ় স্বামী অনুপ  বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃতদেহ আগলে ঘরেই ২ ঘন্টা বসেছিলেন স্ত্রী রীনাদেবী ।এই কথা জানার পর  বিজেপি নেতারা মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে  থাকলেও মুখ ঘুরিয়ে থাকতে পারেন নি   তৃণমূলের কর্মীরা । রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে মনবিক মূল্যবোধের পরিচয় দিয়ে শেষে এলাকার তৃণমূলের কর্মীরাই বর্ষিয়ান বিজেপি নেতার দেহ সৎকারের ব্যাবস্থা করলেন। রাজনৈতিক  বিভেদ ভুলে শনিবার তৃণমূল কর্মীদের এমন  মানবিক ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার ঘটনার প্রশংসা না করে পারেন নি পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্ৰাম থানার চাকতা গ্রামের বাসিন্দারা। পাশে দাঁড়ানোর জন্যে প্রয়াত বিজেপি কর্মীর স্ত্রী তৃণমূলের কর্মীদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ।  কেতুগ্রামের চাকতা গ্রামেই বসবাস করেন  বিজেপি কর্মী অনুপ বন্দ্যোপাধ্যায় (৬০) এর পরিবার ।অনুপবাবু  চাকতা গ্রামে বিজেপির বুথ সভাপতি ছিলেন । শুক্রবার দুপুর নাগাদ  হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতেই তিনি মারা যান। কিন্তু প্রতিবেশীরা মনে করেনেন অনুপবাবু করোনায় আক্রান্থ হয়ে মারা গিয়েছেন ।সেই মিথ্যা গুজবে কানদিয়ে কেতুগ্রামের বিজেপি নেতারাও কেউ  তাঁদের দলের বর্ষিয়ান কর্মীর পরিবারে ধারে কাছে ঘেঁসেন নি বলে অভিযোগ। মৃত বিজেপি কর্মীর স্ত্রী রীনাদেবী বলেন, 'সবাই মনে করেনেয় তাঁর স্বামী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন । তাই সংক্রমণের ভয়ে কেউ তাঁর স্বামীর  মৃতদেহ সৎকারে এগিয়ে আসেননি ।তিনি তাঁর স্বামীর মৃতদেহ আগলে রাতভর পড়েছিলেন ।  শেষে এদিন সকালে এলাকার  তৃণমূলের কর্মীরাই  তাঁর  স্বামীর দেহ সৎকারের ব্যাবস্থা করেন ।' এমন মানবিক উদ্যোগ প্রসঙ্গে কেতুগ্রামের  আনখোনা অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা  বুদুন শেখ বলেন,“তাঁদের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  মানুষের বিপদে আপদে পাশে দাঁড়ানোর কথা দলের কর্মীদের প্রতি মুহুর্তে বলেন । এদিন রীনাদেবীর অসহায় অবস্থার কথা জেনে তাই তারা দয়িত্ব এড়িয়ে বসে থাকতে পারেন নি । রাজনৈতিক বিভেদ দূরে সরিয়ে রেখে চাকতা গ্রামের তৃণমূলে  কর্মীরাই প্রয়াত বিজেপি কর্মী অনুপ বাবুর  বাড়িতে যান । তৃণমূল কর্মীদের উদ্যোগেই বিজেপি কর্মী অনুপ বাবুর মৃতদেহ ২০ ঘন্টা বাদ  সৎকারের ব্যবস্থা  হয়। “ অন্যদিকে দলের বর্ষিয়ান কর্মীর মৃতদেহ সৎকারে দলের কেউ এগিয়ে না যাওয়ার কারণ  প্রসঙ্গে বিজেপির  সাংগঠনিক কাটোয়া জেলার সহ সভাপতি অনিল দত্ত বলেন, “'ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই চাকতা গ্রামে বিজেপির  কর্মীরা সব  গ্রামছাড়া রয়েছেন। তাই দলের  কেউ যেতে পারেননি“ । 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।